আজকেরযুগে মেয়েদের জন্য ই-কমার্সব্যবসা শুরু করা আগেরচেয়ে অনেক সহজ, বিশেষকরে সামাজিক মাধ্যম যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম,এবং টিকটকের মাধ্যমে। আপনি যদি একজনমেয়ে হয়ে নিজের ব্যবসাশুরু করতে চান, তবেখুব বেশি পুঁজি বাবড় পরিসরের প্রয়োজন নেই। সঠিক পরিকল্পনা,ধৈর্য এবং নিয়মিত কাজকরলে আপনি সহজেই নিজেরব্র্যান্ড তৈরি করতে পারবেন।এরজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ইচ্ছাশক্তি আর ধৈর্য্য। যদি এগুলোর একটিও বিচ্যুত হয় তবেব্যবসা আপনার জন্য নয়। কারন ব্যবসায় প্রথম দুইমাসেই আপনি বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখলেশুধু হতাশাই পাবেন। যত শ্রম দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন ততই আপনার সফল হওার সম্ভাবনাবাড়তে থাকবে। তাহলে চলুন,ধাপে ধাপে জানি কীভাবেআপনি সামাজিক মাধ্যমে একটি ই-কমার্সব্যবসা শুরু করতে পারেন।

১. নিজের আগ্রহ ও পণ্য নির্বাচন

একটা জিনিসমাথায় থাকা জরুরী, আপনি কোনটায় সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করেন তা একমাত্র আপনিইভালো জানেন। কারন ওই নির্দিষ্ট জিনিসটার প্রতি আপনার একটা ভালোলাগা কাজ করবে, আপনিআগ্রহ খুজে পাবেন। এজন্য প্রথমে ভাবুন,আপনি কোন ধরনের পণ্যবিক্রি করতে চান। যেহেতুআপনি একজন মেয়ে, তাইমেয়েদের চাহিদা বোঝা আপনার জন্যসহজ হবে। এমন কিছুবেছে নিন, যা নিয়েআপনি আগ্রহী এবং বাজারে যারচাহিদা আছে। কিছু জনপ্রিয়ক্যাটাগরি হতে পারে। যেমন ফ্যাশন ও অ্যাক্সেসরিজহলে ট্রেন্ডি জামাকাপড়, হিজাব, গয়না, ব্যাগ। আবার যদি আপনার পছন্দ বিউটি প্রোডাক্ট হয় তবে মেকআপ, স্কিনকেয়ার, হেয়ার কেয়ার এসব দিয়ে শুরু করতে পারেন।তাছাড়া হ্যান্ডমেড ও ক্রাফট আইটেমযেমন হ্যান্ডমেড জুয়েলারি, স্ক্র্যাপবুক এগুলোও বিকল্প হতে পারে। আবার লাইফস্টাইল ওডেকর যেমন রুম ডেকর,পার্সোনালাইজড গিফট ও বর্তমানে অনেক মানুষের প্রিয়।

উদাহরণস্বরূপ,আপনি যদি মেকআপ ভালোবাসেন,তাহলে জনপ্রিয় বিউটি প্রোডাক্ট এনে বিক্রি করতেপারেন। আপনার আগ্রহ থাকলে আপনি সহজেই পণ্যসম্পর্কে জানবেন এবং গ্রাহকের সঙ্গেবিশ্বাস তৈরি করতে পারবেন।

২. পণ্য সংগ্রহ  বা সোর্সিং

আপনারপণ্যের উৎস ঠিক করাজরুরি। আপনি তিনটি উপায়েপণ্য সংগ্রহ করতে পারেন। যেমন স্থানীয় হোলসেলার থেকে।যেখানে লোকাল মার্কেট বা বড় পাইকারিবাজার (যেমন চট্টগ্রামের চাক্তাইবা ঢাকার গুলিস্তান) থেকে পণ্য সংগ্রহকরা যায়। তাছাড়া অনেক অনলাইন হোলসেল যেমন দারাজ, আলিবাবা,বা অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে হোলসেল রেটেপণ্য কিনতে পারেন। এমনকি আপনার নিজে তৈরি করা জিনিসপত্র দিয়েও শুরু করতে পারেন। যদি আপনি হস্তশিল্পবা ক্রাফট জানেন, তাহলে নিজেই পণ্য তৈরি করুন।এটি কম পুঁজিতে শুরুকরা যায় এবং কাস্টমাইজডআইটেমের চাহিদা বেশি। তাছাড়া হস্তশিল্পের প্রতি মানুষেরএকটা আগ্রহ এবং ভালোলাগা কাজ করে।

তবে, শুরুতেবড় স্টক না এনেপ্রি-অর্ডার ভিত্তিতে কাজ করতে পারেন।গ্রাহক থেকে অর্ডার পাওয়ারপর পণ্য সংগ্রহ করেপাঠান। এতে আপনার ঝুঁকি কম থাকবে।

৩. ব্যবসার নাম ও ব্র্যান্ড

একটিআকর্ষণীয় এবং সহজে মনেরাখার মতো নাম ঠিককরুন। এক্ষেত্রে আপনি আপনার পণ্যের ধরন বুঝে নামদিন। যেমন, যদি আপনি গয়নাবিক্রি করেন, তাহলে ShinyStyles বাGlam by You ধরনেরনাম রাখতে পারেন।

তারপর Canvaবা Adobe Express-এর মতো ফ্রিটুল ব্যবহার করে নিজেই একটিলোগো বানিয়ে নিতে পারেন। এই লোগো আপনারব্যবসার পরিচিতি হয়ে উঠতে পারে, তাইএকে সঠিক গুরুত্ব দিন।

৪. সোশ্যাল মিডিয়া পেজ

ফেসবুকএবং ইনস্টাগ্রামে একটি বিজনেস অ্যাকাউন্টতৈরি করতে হবে। পেজের বায়োতে আপনার পণ্যের বিবরণ, ডেলিভারি অপশন এবং যোগাযোগেরসঠিক তথ্য ঠিকভাবে লিখবেন। একটা উদাহরণস্বরূপ:

Trendy& Affordable Bags – Nationwide Delivery DM to Order

পেজ খোলার পর অন্তত ১০-১৫টি পণ্যের ছবি আপলোড করুন। ভালো আলোতে মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তুলুন। ছবির সঙ্গে বিস্তারিত বিবরণ যেমন পণ্যের বৈশিষ্ট্য, মূল্য, এবং কিভাবে অর্ডার করতে হবে তা দিতে ভুলবেন না।

৫. পণ্য প্রচারের জন্য কন্টেন্ট তৈরি

সোশ্যাল মিডিয়ায় কন্টেন্টই হলো সবকিছু। যত ভালোভাবে আপনার পণ্য তুলে ধরবেন, তত বেশি বিক্রির সুযোগ পাবেন। যেমন: ভালোভাবে প্রোডাক্ট শট অর্থাৎ পণ্যের ছবি ও ভিডিও দিতে পারেন। তারপর Unboxing Video অর্থাৎ নতুন পণ্য খোলার ভিডিও। এতে মানুষের আগ্রহ থাকে একটা জিনিসেরপ্রতি। তাছাড়া Behindthe Scenes ও দেখাতে পারেন যেমন কিভাবে আপনি পণ্য সংগ্রহ বা তৈরি করছেন তা দেখাতে পারেন। এতে মানুষ বুজতে পারবে যে আপনিকোন মানহীন পণ্য বিক্রি করেন না। আপনার প্রতি বিশ্বস্ততা বাড়বে। তবে অবশ্যই কাস্টমার রিভিউ অর্থাৎ সন্তুষ্ট গ্রাহকের ছবি বা ফিডব্যাক শেয়ার করুন। এতে যার ছবি বা ফিডব্যাক শেয়ার করবেন সে নিজেও আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রতি একটা পজিটিভ ভাইব পাবে। অন্যকে বলতে পারে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে।তাছাড়া অন্যরাও আপনার পণ্যের মান সম্পর্কে জানতে পারবে।

তবে বর্তমানে ইনস্টাগ্রাম রিলস এবং টিকটক ভিডিও এখন সবচেয়ে বেশি প্রচার পায়। তাই ১৫-৩০ সেকেন্ডের আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করতে পারেন। এতে আপনার একটা প্যাসিভ ইনকাম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৬. গ্রাহকের অর্ডার ও ডেলিভারি

অর্ডার নিতে হলে মেসেজে বা ফর্ম ব্যবহার করতে পারেন। Google Form ফ্রি এবং সহজ একটি মাধ্যম, যেখানে গ্রাহক নাম, ঠিকানা ও পেমেন্ট তথ্য দিতে পারেন।

ডেলিভারির জন্য অবশ্যইনির্ভরযোগ্য কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করবেন। বাংলাদেশে জনপ্রিয় কুরিয়ার সার্ভিসগুলো হলো—পেপারফ্লাই, পাঠাও, সুন্দরবন।শুরুতে ক্যাশ অন ডেলিভারি (COD) অপশন রাখুন, কারণ বেশিরভাগ গ্রাহক এভাবে লেনদেন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

৭. বিজ্ঞাপন এবং প্রচার

সোশ্যাল মিডিয়ায় পেইড অ্যাড ব্যবহার করলে দ্রুত গ্রাহক